রাক্ষসের গল্প, রাক্ষসের কার্টুন, ঠাকুরমার ঝুলি রাক্ষসের গল্প, মানুষের কার্টুন, রাক্ষসের বই, শবনম উপন্যাস pdf, syed mujtaba ali books pdf download, রাক্ষস খোক্ষসের গল্প, রাক্ষস অর্থ, রাক্ষসের কার্টুন বাংলা, রাক্ষসের কার্টুন রাক্ষসের কার্টুন, বই কেনা সৈয়দ মুজতবা আলী, সৈয়দ মুজতবা আলী রচনাবলী pdf download, পঞ্চতন্ত্র সৈয়দ মুজতবা আলী pdf
রাক্ষসী / চাচা কাহিনী বই রিভিউঃ
অসাধারণ একটা বই। বইটার বেশিরভাগ গল্প বিদেশের পটভূমিতে রচিত এবং তা চাচা বা ইরশাদ চৌধুরীর অভিজ্ঞতা থেকে বর্ণিত। এখানে আরেকটা বিষয় লক্ষ্যনীয় যে, এই গল্পগুলো বলা হচ্ছে আড্ডার ছলে। অর্থাৎ চাচা এবং তাঁর কিছু বন্ধু বার্লিনের ‘হিন্দুস্তান হাউস’ নামক এক হোটেলে বসে যেন নিজেদের মধ্যে আড্ডা দিচ্ছে।
হয়তো কোনো একটা বিষয় যেমন বিয়ে, নাৎসিবাদ, মা-মেয়ের দ্বন্দ্ব ও ভালোবাসা ইত্যাদি সম্পর্কে কথা উঠল আড্ডায় আর তখনই চাচা তার অভিজ্ঞতা থেকে অনুরূপ কোনো নিজের জীবনের কাহিনী বললেন। আবার কিছু গল্প রয়েছে যেগুলো ভারত বা প্যারিসের পটভূমিতে বা রচিত এবং আড্ডার স্থলে না বলে উত্তমপুরুষে রচিত। প্রতিটা গল্পই অসাধারণ, হাস্যরসে ভরপুর।
তবে সে হাস্যরস কখনোই স্থুল নয়, অতি সূক্ষ্ম। আর তার সাথে অতি উচ্চমানের দার্শনিক কথাও বলেছেন সমানতালে, এটা বোধহয় মুজতবা আলী বলেই সম্ভব হয়েছিল। আবার যৌবনে শান্তিনিকেতনে পড়ার কারণেই হোক আর যে কারণেই হোক তাঁর উপর রবীন্দ্রনাথের প্রভাবও স্পষ্ট, প্রায় প্রতিটা গল্পেই কবিগুরুর বিভিন্ন কবিতা ব্যবহৃত হয়েছে। এখন তবে দু-একটা গল্পের কথা বলা যাক।
বইয়ের যে গল্পটা আমার সবচেয়ে ভালো লেগেছে তা হলো ‘ বেঁচে থাকো সর্দি কাশি ‘। অবাক হতে পারেন, এ আবার কেমন নাম! কিন্তু গল্পটা পড়লে আপনিও সর্দিকাশির মর্ম বুঝতে পারবেন, আপনিও চাইবেন মাঝেমধ্যে আপনার সর্দি হোক! বিশ্বাস হচ্ছে না? তবে খুলেই বলি। কথক নিজের সর্দি নিয়ে ডাক্তারের কাছে গেলে গল্পের সূচনা। ডাক্তার কথকের বন্ধু হওয়ায় সেখানেই শুরু হয় সর্দি নিয়ে আড্ডা।
গল্পটা ডাক্তার বন্ধুটির। একবার সে বার্লিনের এক রেস্তোরাঁয় এক মেয়েকে দেখে মুগ্ধ হয়। কিন্তু নিজের স্বভাবসুলভ লজ্জার জন্য আগ বাড়িয়ে কথা বলতে পারছিল না সে, আবার মুগ্ধতার মাত্রা এত বেশি যে ছেড়ে যেতেও পারছিল না। আর এভাবেই ডাক্তার সাহেব নিজেকে একসময় আবিষ্কার করল মিউনিখগামী ট্রেনে! আর সেখানেই ছোট্ট এক দুর্ঘটনা থেকে কথা বলার শুরু। তারপর পরিচয়, প্রণয়।
কিন্তু একে অপরের বেশি কাছে যেতে পারছিল না কেননা এভার (মেয়েটি) ভয় পাছে তার আশ্রয়দাতা পিসি তাদের দেখে ফেলে। কিন্তু প্রেম এত বিধিনিষেধ মানে না। তাইতো একসময় সে পিটারকে (ডাক্তার) নিজ বাড়িতে আমন্ত্রণ জানায়, অবশ্যই পিসিকে লুকিয়ে। এদিকে যেই সে ডাক্তারকে নিজের রুমে নিয়ে গেছে ওমনি শুরু হয় ডাক্তারের সর্দি, মাথার উপর বালিশ, কম্বল দিয়েও শব্দ রোখা যাচ্ছিল না।
আর এই শব্দেই পিসি রুমে চলে আসে আর পিটার ও এভার বিয়েও হয়ে যায় ঐ সর্দির শব্দেই। তাইতো সে বলতেই পারে, ‘বেঁচে থাকো সর্দি কাশি! ‘
‘ পাদটীকা ‘ গল্পটার কথা ধরা যাক। গল্পটা এক সংস্কৃত পন্ডিতের গল্প যিনি আজীবন খালি গায়ে ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে ছাত্রদের তৎসম শেখাতেন। কিন্তু একবার এক ইংরেজ পরিদর্শক স্কুল পরিদর্শনে এলে তার জীবনটাই পাল্টে গেল।
তাকে স্বভাববিরুদ্ধভাবে গায়ে গেন্জি দিতে হল, চেয়ারে বসে ঘুমানোর পরিবর্তে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে স্যারের পরামর্শ শুনতে হল। স্যার চলে গেলেন। কিন্তু এক ভয়াবহ ছাপ রেখে গেলেন পন্ডিতের উপর। কি সেটা? সেটা হল স্যারের তিনপেয়ে কুুকুরটার পিছনে স্যার যেখানে মাসে পঁচাত্তর টাকা খরচ করেন সেখানে আট সদস্যের পন্ডিতের পরিবারের জীবন নির্বাহের জন্য মাসিক বেতন পঁচিশ টাকা।
আর তার এই প্রশ্নটা তো সবার বুকে বিঁধতে বাধ্য, ‘এখন বল তো দেখি, তবে বুঝি তোর পেটে কত বিদ্যে, এই ব্রাহ্মণ পরিবার লাট সায়েবের কুকুরের কয়টা ঠ্যাঙের সমান?’ অসাধারণ একটা গল্প। এই একটা লাইনের মাধ্যমেই সহজে অনুধাবন করা যায়, ভারতবর্ষে ইংরেজ শিক্ষা আসার ফলে সংস্কৃত পন্ডিতদের কি অবস্থা হয়েছিল।
থাক, আর বলব না। বইয়ে মোট ১১টি গল্প স্থান পেয়েছে। তাদের কোনোটি যেমন হাস্যরসের যোগান দেয় আবার কোনোটি তেমনি আপনাকে বিষণ্ণও করবে। মা-জননী, তীর্থহারা বা পাদটীকা গল্পগুলো পড়লে বুঝতে পারবেন লেখকের গল্পবলার শক্তি। তাইতো মূলত হাস্যরসের বই হয়েও বইটা বিচিত্রগামী।
তো আসুন সঙ্গী হই বাংলা ভাষায় রচিত বিশুদ্ধ আন্তর্জাতিক রসিকতার!
(নোটঃ চাচা কাহিনী বইটিতে ১১ টি গল্প রয়েছে সৈয়দ মুজতবা আলীর, সেই খানের ১ টি গল্প নিয়েই এই পিডিএফ বইটি)
বইয়ের বিবরণ
বইয়ের নামঃ রাক্ষসী
লেখকঃ সৈয়দ মুজতবা আলী
ক্যাটেগরিঃ গল্পের বই
পিডিএফ সাইজঃ ২ মেগাবাইট প্রায়।
রকমারি থেকে ক্রয় করার লিঙ্কঃ
রাক্ষসী বই
#বইটি ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত। #লেখকের ক্ষতি আমাদের কাম্য নয়, বইটির হার্ড কপি কেনার সমর্থ থাকলে বইটির হার্ড কপি কিনে পড়ুন।
#(আমাদের ব্লগের সমস্ত বইগুলো ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত। লেখকের বা প্রকাশনীর যদি কোনো বইয়ের PDF নিয়ে অভিযোগ থাকে তাহলে দয়াকরে জানান, আমাদেরকে জানানোর ২৪ ঘন্টার মধ্যে PDF টি রিমুভ করে দিবো।) ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। ধন্যবাদ পোস্ট টি পড়ার জন্য।